Wednesday, October 22, 2025
spot_img
Homeঅর্থনীতিজৈন্তা ফটোগ্রাফি সোসাইটি’র উদ্যোগে লাল শাপলার বিলে সবুজ বনায়ন।

জৈন্তা ফটোগ্রাফি সোসাইটি’র উদ্যোগে লাল শাপলার বিলে সবুজ বনায়ন।

- Advertisement -
Google search engine

জৈন্তা ফটোগ্রাফি সোসাইটি’র উদ্যোগে লাল শাপলার বিলে সবুজ বনায়ন।

মো.দুলাল হোসেন রাজু,সিলেট ব্যুারো:

সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার পর্যটন খ্যাত লাল শাপলা বিল।শাপলার রাজ্যে আগত পর্যটকদের কথা চিন্তা করে জৈন্তা ফটোগ্রাফি সোসাইটি’র নিজ অর্থয়ানে রোপন করে সামাজিক বনায়ন।
জৈন্তাপুর উপজেলার লাল শাপলা বিল ঘুরে দেখা গেছে এক ব্যতিক্রম চিত্র ।ভারতের সীমান্তঘেঁষা পর্যটন খ্যাত জৈন্তাপুর লাল শাপলা বিল নিয়ে ২০১৭ সালে বিভিন্ন জাতীয় গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এর পর হতে লাল শাপলা বিলের পরিচিতি দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করে। কিন্তু লাল শাপলা বিলে আগত পর্যটকরা বেশি সময় শাপলার সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে পারেন না। কারণ বিলে মধ্যে ছায়াতলে আশ্রয় গ্রহনের জন্য নেই কোন গাছ-গাছালী। তাই পর্যটকরা দ্রুত বিলটির সৌন্দর্য্য উপভোগ করে চলে যায়।পর্যটকদের কথা বিবেচনা করে লাল শাপলার বিলের পাড়ে বৃক্ষরোপনের উদ্ব্যোগ নেয়।
সংবাদকর্মী মো.রেজওয়ান করিম সাব্বির ও ইমরান আহমদ সরকারি মহিলা ডিগ্রী কলেজের সহকারি অধ্যাপক মো. খাইরুল ইসলাম। তারা প্রাথমিক ভাবে বিলে পর্যটকদের ছায়া সৃষ্টির কথা চিন্তা করেন। পরে বিষয়টি নিয়ে আরও দুই বৃক্ষপ্রেমী তৎকালীন সোনালী ব্যাংক জৈন্তাপুর শাখার ব্যবস্থাপক সদরুল আলম ও পরিবেশ কর্মী নিজপাট তোয়াসীহাটির সন্তান ফনিলাল দের সাথে আলোচনা করেন। আলোচনায় বৃক্ষ ভিক্ষার মাধ্যমে ডিবির হাওর লাল শাপলা বিলের রাস্তায় ছায়া সৃষ্টির উদ্যোগ নেয়। বৃক্ষরোপন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে
জৈন্তাপুর মডেল থানার তৎকালীন ওসি শ্যামল বনিক বিভিন্ন প্রজাতীর ১০১টি বৃক্ষের চারা ও রোপন খরচ প্রদান করে আনুষ্ঠানিক বৃক্ষ রোপন কার্যক্রম এর উদ্বোধন করেন। এভাবে ক্রমান্বয়ে লাল শাপলা বিলের জনসাধারণ চলাচলের রাস্তার দুপাশে বৃক্ষের চারা রোপন কার্যক্রম শুরু হয়। পরবর্তীতে জৈন্তাপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সালাহ উদ্দিন মানিকের সহায়তায় তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুসরাত আজমেরী হক বৃক্ষ রোপনের জন্য ৫০ হাজার টাকা বরাদ্ধ দেয় এবং উপজেলা পরিষদের সমন্বয় সভায় আলোচনার মাধ্যমে পুরো বিল এলাকার ৫টি স্থান চিহ্নিত করে তরুছায়া নামে সামাজিক বনায়ন করতে সাংবাদিক মো.রেজওয়ান করিম সাব্বির ও সহকারি অধ্যাপক মো.খায়রুল ইসলাম’র সাথে আলোচনা করে সুনিদিষ্ট শর্তে জৈন্তা ফটোগ্রাফী সোসাইটিকে বৃক্ষ রেপানের অনুমতি দেয়।
এর পর হতে জৈন্তা ফটোগ্রাফী সোসাইটি স্থানীয় গ্রামবাসীর মধ্যে আগ্রহী যুবক, ব্যবসায়ী, মসজিদের ইমাম, শিক্ষক, আগ্রহি বৃক্ষপ্রেমী নারী , সাংবাদিক, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা, বন কর্মকর্তা সহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার শতাধিক ব্যক্তির উদ্যোগে লাল শাপলা বিল ও বিলের আশ পাশের পরিত্যাক্ত সরকারি খাঁস ভূমিতে নিজেদের অর্থায়নে বেলজিয়াম, সাদা শিমুল, রেন্ট্রী, কৃষ্ণচুড়া, অর্জুন, চাকারশি, সোনালো, জারুল, হিজল, কদম, বৃক্ষের প্রায় ১৭ হাজারের অধিক চারা রোপন করা হয়। প্রকৃতিক প্রতিকুল পরিবেশ ও বন্যায় প্রায় ৫হাজারের অধিক চারা বিনষ্ট হয়। তবুও তরুছায়া প্রকল্পের উদ্যোগতারা তাদের এই বৃক্ষ রেপান কার্যক্রম চলমান রেখেছেন। চলতি বছরে জৈন্তাপুর উপজেলা কৃষি অফিসের সহায়তায় ৫০টি তাল গাছের চারা রোপন করা হয়। এছাড়া বর্তমানে জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জর্জ মিত্র চাকমা ও তৎকালীন সিলেটের জেলা প্রশাসক শের মোহাম্মদ মাহবুব মুরাদ এর সার্বিক সহযোগিতায় ৮হাজার সুপারি বৃক্ষের চারা রোপন করা হয় এবং ৪শত কৃষ্ণচুড়া ও ১শত হিজল বৃক্ষের চারা রোপন করা হয়।বর্তমানে রোপন পরিচর্যা আর্থিক ব্যায় জৈন্তা ফটোগ্রাফী সোসাইটি চালিয়ে যাচ্ছে।
তরু ছায়া প্রকল্পে শুধু পর্যটকদের ছায়া নয়, ভবিষ্যতে সেখান থেকে আয়ের পথও খুলবে বলে আশা করছেন উদ্যোক্তারা। সরকার ও বিভিন্ন জনের সহায়তায় বিভিন্ন প্রজাতির গাছ লাগানো হয়েছে।
শাপলা বিলের রাস্তায় ঢুকতেই চোখে পড়ে তালগাছ, বেলজিয়াম আর সাদা শিমুল, কৃষ্ণচূড়ার চারা। রাস্তার পাশে বিলের মাঝে লাগানো হয়েছে হিজল-জারুল। টিলা জমিতে লাগানো হয়েছে সুপারি গাছ। দুই থেকে তিন ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়েছে গাছগুলো। উত্তরপাশে বিলের পারে টিলা ভূমিতে লাগানো হয়েছে বেলজিয়াম গাছ। ৩০ একর জায়গা চুক্তিবদ্ধ হলেও বর্তমানে প্রায় ১৮ একর এলাকায় এসব বনজ ও ফলদ গাছ লাগিয়েছেন ফটোগ্রাফির সদস্যরা।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রেজওয়ান করিম সাব্বির প্রকল্পটি বাস্তবায়নে অগ্রভাগে কাজ করছেন। তিনি জানিয়েছেন, তাদের একশ সদস্য। সবার সহযোগিতায় ভবিষ্যতে বিলের পশ্চিম ও দক্ষিণ পারের জমিতে বনায়ন করবেন। তিনি বলেন, ‘আমরা বিলের সৌন্দর্য নিয়ে সব সময় সংবাদ ও ছবি প্রকাশ করি। কিন্তু যারা বিল দেখতে আসেন, তারা ছায়ায় দাঁড়ানোর মতো জায়গা পান না। রোদে দাঁড়িয়ে বিল ও রাজার সমাধি দেখতে হয়। সেই চিন্তা থেকে সরকারের সহায়তায় আমরা প্রকল্প হাতে নেই। উপজেলা পরিষদ ও প্রশাসন আমাদের সহযোগিতা করছে।’
সংগঠনের সভাপতি খায়রুল ইসলাম জানিয়েছেন, ২০১৭ সালে মৌখিক অনুমতি নিয়ে বনায়ন শুরু করেন। ২০২১ সালে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে চুক্তি হয়। এরপর নতুন করে গাছ লাগানো হয়। ১৯ হাজার গাছ তারা লাগিয়েছেন। এর মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় পাঁচ হাজার। সেখানে আবার নতুন করে গাছ লাগানো হয়েছে। ২০৪৬ সালে তাদের চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে। আয় থেকে ২৫ ভাগ উপজেলা পরিষদ, দুটি ইউনিয়ন পরিষদ পাঁচ ভাগ ও উপকারভোগীরা (সোসাইটি) ৭০ ভাগ পাবে।

- Advertisement -
Google search engine
আরো খবর
- Advertisment -spot_img

সর্বশেষ সংবাদ

এখনো দেশ আমরা পুরোপুরি মুক্ত করতে পারি নাই ::—বি এন পি চেয়ারপারসন উপদেষ্টা আব্দুস সালাম

এখনো দেশ আমরা পুরোপুরি মুক্ত করতে পারি নাই ::---বি এন পি চেয়ারপারসন উপদেষ্টা আব্দুস সালাম আব্দুল হালিম মিয়া,বাঘা রাজশাহী থেকে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা...

বাঘায় ইউএনও কাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট-২০২৫ এর উদ্বোধন, বাঘা পৌরসভা ফুটবল একাদশের জয়

বাঘায় ইউএনও কাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট-২০২৫ এর উদ্বোধন, বাঘা পৌরসভা ফুটবল একাদশের জয় আব্দুল হালিম মিয়া রাজশাহীর বাঘা থেকে রাজশাহীর বাঘায় তারুণ্যের উৎসব উপলক্ষে...

জৈন্তাপুরে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বীজ সার প্রণোদনা কর্মসূচির উদ্বোধন।

জৈন্তাপুরে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বীজ সার প্রণোদনা কর্মসূচির উদ্বোধন। ৃ মো. দুলাল হোসেন রাজু, সিলেট ব্যুারো : সিলেটের জৈন্তাপুরে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে...
- Advertisment -spot_img

জনপ্রিয় খবর