Monday, October 20, 2025
spot_img
Homeঅপরাধনিষেধাজ্ঞা ভেঙ্গে পদ্মায় ইলিশ শিকার!! মাছ-জাল জব্দ করলেও কাউকে...

নিষেধাজ্ঞা ভেঙ্গে পদ্মায় ইলিশ শিকার!! মাছ-জাল জব্দ করলেও কাউকে আইনের আওতায় নেওয়া হয়নি

- Advertisement -
Google search engine

নিষেধাজ্ঞা ভেঙ্গে পদ্মায় ইলিশ শিকার!!
মাছ-জাল জব্দ করলেও কাউকে আইনের আওতায় নেওয়া হয়নি

রাজশাহীর বাঘা থেকে বিশেষ প্রতিনিধি

ইলিশ প্রজনন মৌসুমে, আইন অমান্যকারিদের সশ্রম কারাদন্ড অথবা অর্থদন্ড অথবা উভয়দন্ডের বিধান রেখে ০৪-২৫ অক্টোবর(২২দিন) মাছ ধরা নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কিন্তু মৎস্য অধিদপ্তরের নিষেজ্ঞাকে বৃদ্ধাঙুলি দেখিয়ে পদ্মায় মা ইলিশ ধরে বিক্রি করা হচ্ছে। এসব মাছ প্রকাশ্যে ও পদ্মার তীরবর্তী এলাকায় ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে।
রোববার (১৯-১০-২০২৫) পর্যন্ত, ১৬ দিনে ৩ কেজি ইলিশ মাছ ও আনুমানিক ৪হাজার মিটার জাল জব্দ করেছে মৎস্য অধিদপ্তর। তবে জড়িতদের কাউকে আইনের আওতায় নেওয়া যায়নি । দুর্বল অভিযানের কারণে মা ইলিশ রক্ষা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। এবারের প্রতিপাদ্য ‘মা ইলিশ রক্ষা পেলে সারা বছর ইলিশ মেলে’।
পদ্মার পাড় এলাকার কিশোরপুর বাজারের একটি দোকানে কয়েকজনের গল্পের সময় কান পেতে জানা গেল, পদ্মায় জাল ফেলে কম বেশি যে ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে তার মধ্যে জাটকা ইলিশ বেশি। কেজি ওজনের মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৮০০শ টাকা, আধা কেজি ওজনের ১৫০০শ টাকা,২০০ থেকে ২৫০ গ্রাম ওজনের৭০০শ টাকা আর ১৫/২০ টাতে কেজি এমন মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩৫০শ থেকে ৪০০শ টাকা কেজি দরে।
তাদের ভাষ্য, নিষিদ্ধের সময়ে যে চাল দেওয়া হয় তাতে মাছ না ধরে জীবন চলেনা। সরকারিভাবে দেওয়া চালের মানও খুব ভালোনা। গল্পের মধ্যে ১জন জেলেও ছিল। ক্রেতা সেজে ওই জেলের নাম জানতে চাইলে বলতে রাজি না হয়ে উঠে চলে যান।
উপস্থিতদের আলাপচারিতায় জানা গেল , দিনের চেয়ে রাতে ইলিশ শিকার হয় বেশি। বিকেল ৩টা থেকে ৪টার মধ্যে এক দফা নদীতে জাল ফেলে সন্ধ্যায় জাল তুলে মাছ নিয়ে আসে নদীর তীরে। রাতে আরেক দফা নদীতে জাল ফেলে সকালে মাছ নিয়ে তীরে এসে, নৌকা থেকে নামিয়ে নদী তীরের ঝোপ-জঙ্গলে, কচুরিপানার মধ্যে লুকিয়ে রাখা ছাড়াও মজুদ করা হয় বিভিন্ন বাড়িতে। সুযোগ বুঝে ভারতের জেলেরাও বাংলাদেশের সীমানায় এসে মাছ ধরছে। আইন শৃঙাখলা বাহিনীর হাতে ধরা পড়লে স্রোতে ভেসে আসার দোহাই দিয়ে রক্ষা পাচ্ছে।
নিষিদ্ধ সময়ে ইলিশ ধরা,পরিবহন,মজুদ ও বিক্রি বন্ধে যারা কাজ করবে,তাদের সহযোগিতায়ই নদীতে অবাধে মা ইলিশ শিকার করছে বলে অভিযোগও উঠেছে। জড়িতদের নামের প্রশ্নে, উত্তর না পেয়ে বোঝা গেল, বিষয়টি জানাজানি হলে নিষেধাজ্ঞার পর ওই লোকদের ওপর অত্যাচার করা হতে পারে। এ কারণে স্থানীয়রা তাদের নাম জানলেও বলতে রাজি হননি।
মৎস্য অধিদপ্তরের সাথে যুক্ত,এমন একজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বিগত বছরের তুলনায় এবার পদ্মায় পানির প্রবাহ বেশি থাকায় মাছ বেশি এসেছে । রাজশাহীর বাঘা-চারঘাটে অন্তত ২০টি গ্রুপ- পদ্মায় মা ইলিশ ধরে বিক্রি করছে।
রোববার (১৯-১০-২৫) থেকে দুইদিন সরেজমিন দেখা যায়, বাঘার চকরাজাপুর, কালিদাশখালি, চৌমাদিয়া, আতারপাড়া, কিশোরপুর,আলাইপুর-মীরগঞ্জ নদী পাড়ের দক্ষিণ-পশ্চিমে ও পিরোজপুর,রাওথা এলাকার পদ্মায় মা ইলিশ শিকার করছে জেলেরা। ইলিশ শিকার করে আসা ট্রলারগুলো সারিবদ্ধভাবে ঘাটে নোঙর করে আছে। নোঙর করা প্রতিটি ট্রলারের খন্দ (ট্রলারে মাছ সংরক্ষণ করার বাক্স) থেকে দু’তিন জন জেলে শিকার করা ইলিশ মাছ বের করে দিচ্ছেন। অন্য জেলেরা এই মাছ থেকে ছোট ও বড় ইলিশ পৃথক করে ঝুড়িতে তুলে দিচ্ছেন। এসব ঝুড়ি মাথায় করে গোপন স্থানে নিয়ে যাচ্ছেন।
জেলেরা বলেন, অন্য সময় এখানকার পদ্মায় ইলিশ মাছ পাওয়া যায় না। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে পদ্মায় ডিমওয়ালা মা ইলিশ আর জাটকা ধরে বিক্রি করছেন।
হালিম নামে এক ক্রেতা জানান, চারঘাটের পিরোজপুর শ্বশুর বাড়ি থেকে ফেরার পথে আধা কেজি ওজনের ১টি মাছ কিনেছেন ১৫০০শ টাকা কেজি দরে।
কিশোরপুর গ্রামের রিপন জানান, অর্থ সংকটে ইলিশসহ অন্য মাছ ধরার মতো বড় বড় জাল তার নেই। ডিঙি নৌকায় মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন। নদী ভাঙনে তার পৈতৃক ২৫ বিঘা জমি নদী গর্ভে চলে গেছে। তার মতো জেলে কার্ড নেই এমন অনেকেই মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন বলেও জানান।
চকরাজাপুরের নিবন্ধিত জেলে ওয়ালিউর রহমান জানান, এলাকার বেশিরভাগ জেলে মাধ ধরে সংসার পরিচালানা করেন। মাছ না ধরলে পরিবার পরিজন নিয়ে দু’বেলা দু’মুঠো খাবার যোগাতেই হিমশিম খেতে হয়। নিষিদ্ধ সময়ে মাত্র ২৫ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে। যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।

উপজেলা মৎস্য অফিসার তহুরা হক বলেন, অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এরই মধ্যেই কিছু জেলে চুরি করে মাছ ধরে বিক্রি করছে। গত বুধবার(১৪-১০-২০২৫) আনুমানিক ২০০০(দুই) হাজার মিটার জাল ও চকরাজাপুর বাজারে প্রকাশে বিক্রির সময় ৩ কেজি ইলিশ জব্দ করা হয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার(০৭/১০/২৫) প্রায় ২০০০(দুই) হাজার মিটার জাল জব্দ করা হয়। জালগুলো পুড়িয়ে নষ্ট করা হয়েছে ও ইলিশ মাছগুলো মাদ্রাসা-এতিমখানায় দেওয়া হয়েছে। কাউকে দন্ড দেওয়া হয়নি। তার দাবি,এবার কমসংখ্যক জেলে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে মাছ শিকারে নেমেছে। ##
সংবাদ প্রেরক
আব্দুল হালিম মিঞা,
বাঘা,রাজশাহী,

- Advertisement -
Google search engine
আরো খবর
- Advertisment -spot_img

সর্বশেষ সংবাদ

রাজশাহী-৬ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী গোলাম মোস্তফা মামুনের লিফলেট বিতরণ

রাজশাহী-৬ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী গোলাম মোস্তফা মামুনের লিফলেট বিতরণ বিশেষ প্রতিনিধি : আমরা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছি। তারেক রহমান...

সিলেটের জৈন্তাপুর ও গোয়াইনঘাটের সারি নদীতে অবৈধ বালু উত্তোলনের মহোৎসব

সিলেটের জৈন্তাপুর ও গোয়াইনঘাটের সারি নদীতে অবৈধ বালু উত্তোলনের মহোৎসব নাইম আহমদ, গোয়াইনঘাট (সিলেট) প্রতিনিধি সিলেটের জৈন্তাপুর ও গোয়াইনঘাট উপজেলার সারি নদীতে ড্রেজার মেশিন দিয়ে চলছে...

গিনিস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নাম লেখাতে যাচ্ছে এম এ পাস চা ওয়ালা

গিনিস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নাম লেখাতে যাচ্ছে এম এ পাস চা ওয়ালা ডেস্ক রিপোর্ট : বাংলাদেশের এক সাধারণ চা বিক্রেতা থেকে দেশের আইকন হয়ে ওঠা...
- Advertisment -spot_img

জনপ্রিয় খবর